, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


মা নেই, পরিবারে অভাব, তবু ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় সারজানা

  • আপলোড সময় : ১১-০৬-২০২৩ ০২:৩১:৪১ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-০৬-২০২৩ ০২:৩১:৪১ অপরাহ্ন
মা নেই, পরিবারে অভাব, তবু ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় সারজানা
এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের ‘কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বাণিজ্য বিভাগ থেকে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন সীতাকুণ্ডের মেয়ে সারজানা আক্তার লিমানা। তিনি নৈর্ব্যক্তিক, লিখিত এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে মোট ১২০ নম্বরের পরীক্ষায় পেয়েছেন ৮৪.৭৫ নম্বর। তার ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। 

তিনি সীতাকুণ্ড সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। সারজানা সীতাকুণ্ড পৌরসভার দক্ষিণ মহাদেবপুরের চৌধুরী পাড়ার কৃষক জহরুল আলমের কন্যা। কিশোর বয়সে হারান মা রুমা আক্তারকে। তিন ভাই–বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন পড়াশোনায় খুব মনযোগী। নিজের নিরলস প্রচেষ্টা, পরিবার ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণা তাকে সাফল্যের উচ্চতায় নিয়ে গেছে বলে মনে করেন সারজানা। 

এদিকে পারিবারিক অস্বচ্ছলতা তার পড়াশোনায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি বলে উল্লেখ করে সারজানা বলেন, কৃষক বাবার আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো নয়। প্রাইভেট পড়া সম্ভব হতো না। তবে পড়াশোনাটা থামেনি প্যাসিফিক জিন্স ফাউন্ডেশন পরিবারের কারণে। আমি আজীবন কৃতজ্ঞ এই পরিবারের প্রতি। অষ্টম শ্রেণি থেকে ফাউন্ডেশনটি আমার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছে। 

এ সময় ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে সারজানা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব। আমি যেহেতু ব্যবসায় শিক্ষার স্টুডেন্ট। আমার আগ্রহের জায়গা হচ্ছে সিএ’র প্রতি। বাকিটা আল্লাহর উপর। সকলের কাছে দোয়া চাই যেন পড়াশোনা শেষে নিজেকে দেশ ও জাতির সেবায় নিয়োজিত রাখতে পারি।

সারজানা বলেন, মারা যাওয়ার আগে মা বলেছিলেন আমার মেয়ে পড়াশোনা করবে। প্রয়োজনে রক্ত বিক্রি করে হলেও পড়াশোনা করাব। মাকে বেশিদিন পাইনি। কিন্তু মায়ের এই কথাটা আমার কাছে ছিল চ্যালেঞ্জ। সেখান থেকে আমি অনুপ্রেরণা পেয়েছি। পড়াশোনা করেছি। এরপর থেকে ক্লাস ফাইভ থেকে সবগুলো পরীক্ষায় জিপিএ–৫ পেয়েছি।

মেয়ের সাফল্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে বাবা জহুরুল আলম বলেন, মহান আল্লাহর কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া। আল্লাহ সহায় ছিলেন বলেই এতো বড় প্রাপ্তি সম্ভব হয়েছে। প্যাসিফিক জিন্স ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত কোচিং সেন্টারের কো–অর্ডিনেটর এমরান হোসেন রাকিব বলেন, সারজানা কোচিংয়ের সবচেয়ে পরিশ্রমী এবং অভিডিয়েন্ট একজন স্টুডেন্ট ছিল। কোচিংয়ের মডেল টেস্ট পরীক্ষায় সবসময় টপ রেজাল্ট করতো। সে এই ফলাফলটা ডিজার্ভ করে।

এদিকে সীতাকুণ্ড সরকারি মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিদারুল আলম বলেন, সারজানা অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্রী। সে সীতাকুণ্ডের গর্ব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হওয়ায় তার কলেজের শিক্ষকরা খুবই আনন্দিত ও গর্বিত।
দেশে ফিরে নিজের স্বপ্নের কথা জানালেন বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস

দেশে ফিরে নিজের স্বপ্নের কথা জানালেন বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস